যাই হোক, আমাদের আজকের পোস্টের বিষয় এটি নয়। আমরা আজকে পোস্টে সাইবার অপরাধীরা কিভাবে ধরা খায় সেটাই জানব।
অপরাধ সংঘটনঃ
সাইবার ক্রিমিনালরা অপরাধ সংঘটন করার আগে নিজেদের জ্ঞান অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে নেয়, যাতে পুলিশের কাছে ধরা খেয়ে ১৪ শিকের ভাত না খাওয়া লাগে!
যাইহোক, VPN ইউজ করার পর এবং MAC ID স্পুফ এর পর রবিন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ডাটাবেস হ্যাক করল।
সংঘটনের পরঃ
পুলিশকে জানানোর পরের ঘটনাঃ
বাংলাদেশ পুলিশ সাধারণত সাইবার অপরাধ এর তদন্ত করে না। তারা হয় বিফল হয়ে উলটাপালটা রিপোর্ট লিখে অথবা ব্যাপারটা যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ের হয় তাহলে RAB অথবা Army কে জানায়। এক্ষেত্রে যেহেতু ব্যাপারটা সিরিয়াস পর্যায়ের তাই তারা RAB কে জানাল।
RAB কে জানানোর পরঃ
RAB বাংলাদেশের স্পেশাল ফোর্সের একটি। RAB এর হাতে বর্তমানে সেলফোন ট্রাকিং টেকনোলজি, সেলফোন টেপিং টেকনোলজি এবং যেকোন বাংলাদেশি কোম্পানির Confidential এ ওয়ারেন্ট এর ভিত্তিতে Access এর অনুমতি রয়েছে। যদিও RAB এর নাম শুনলেই হয়, ওয়ারেন্ট লাগে না!!
আমাদের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে RAB ওয়েবসাইট এর দেখাশোনা করার প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করল এবং ধরা যাক হ্যাকার উক্ত ওয়েবসাইট এর সকল log মুছে ফেলায় ওই প্রতিষ্ঠান কোন IP address প্রদান করতে পারল না। RAB এরপর Hosting সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করল। Hosting প্রতিষ্ঠান RAB কে হ্যাকার এর IP address দিয়ে সাহায্য করল।
কিন্তু RAB যেই আইপি এড্রেসটি হাতে পেল সেটি ছিল বিদেশের VPN সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের IP address. RAB উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে IP address এবং হ্যাকিং হওয়ার সময় দেয়ার সাতদিনের মাঝে উক্ত প্রতিষ্ঠান RAB কে হ্যাকার এর আইপি দিয়ে সাহায্য করল।
কি ভাবছেন? VPN সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান RAB কে আইপি কেন দিল এবং আইপি কোথায় পেল?
জনপ্রিয় ভিপিএন সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান Cyberghost এবং HotspotShield এর Terms of Service (সেবাদেয়ার শর্ত) দেখুনঃ
CyberghostVPN:
HotspotShield:
অর্থাৎ আপনি যদি তাদের শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে তারাও আপনাকে দেয়া শর্ত ভঙ্গ করবে। রবিন ক্রিমিনাল এক্টিভিটি/ হ্যাকিং এর মাধ্যমে তাদের শর্ত ভঙ্গ করেছে, তাছাড়া সকল VPN Provider ই আইন মেনে চলে। যদি যেকোন সময় যেকোন ভিপিএন প্রোভাইডারকে Interpol এর সদস্য কোন দেশ ওয়ারেন্ট দেখায়, তাহলে তারা নির্দিস্ট গ্রাহকের তথ্য দেখাতে বাধ্য। VPN প্রোভাইডাররা সাধারনত 40 দিন পর্যন্ত আগের তথ্য সংরক্ষন করে।
এরপরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত। RAB রবিনের IP পাওয়ার পর IP এর প্রোভাইডার ISP এর সাথে যোগাযোগ করে রবিন এর তথ্য চাইবে। হ্যাকিং এর সময় রবিনের কানেকশন কোথায় ছিল সেটার latitude longitude চাইবে। ISP বেচারা আর কি করবে? দিয়ে দিবে। যদি latitude, longitude দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে ফোন নাম্বার দিবে। হ্যাকার ISP কে দেয়া ফোন নাম্বার এর সিম কার্ড ফেলেও দিতে পারে। কোন সমস্যা নাই!
পরের ঘটনা তো জানেনই!
আজ এ পর্যন্তই। আগামী পোস্টে আমাদের মোবাইল ফোনের উপর সরকারের এবং বিভিন্ন "মহল" এর নজরদারির বিষয়টা তুলে ধরব।
ভালো থাকবেন।
ওহ!! আরেকটা কথা!! পোস্ট ভালো লাগলে (খারাপ লাগলেও!!